উপন্যাস – ভালোবাসা
লেখক – কবি ও সাংবাদিক মোঃ ছিদ্দিক
নিজের ইচ্ছেকে, নিজের স্বপ্নকে, । আয়নার সামনে বসে নিজেকে দেখছি। খুব আহামরি সুন্দরী ছিলাম না আমি। তবে ছেলে বেশে খুব একটা খারাপ লাগছে না। বরং সুন্দরই লাগছে বলা যায়। ঠিক এমনভাবেই তার জন্য সাজতে চেয়েছিলাম। তার নামেই মেহেদী দিয়ে রাঙাতে চেয়েছিলাম এই দুহাত। কিন্তু ভাগ্য যে আমার সাথে নেই। তাই আজ নিজের ভালোবাসাকে বলি দিতে হয়েছে। কিন্তু মেহেদী পরি নি। কারণ ওই মেহেদী রাঙা হাত দেখার অধিকার শুধুমাত্র একজনের। আচ্ছা যাকে আমি আমার ভালোবাসা বলছি, সে কি আদৌ আমাকে ভালোবাসত? হয়তো না। কারণ যদি সত্যি ভালোবাসতো তাহলে মাঝরাস্তায় আমার হাত ছেড়ে চলে যেত না। পারতো না ভালোবাসার হাজারো স্বপ্ন দুচোখে সাজিয়ে দিয়ে তা দুঃস্বপ্ন নাম দিয়ে ভেঙে চুরমার করে দিতে। আর না পারতো আমার হৃদয়ে এভাবে ক্ষতর সৃষ্টি করে রক্তক্ষরণ করতে।
উপরে উপরে ঠিক যতটা হাসিখুশি আমি, ভেতরে ভেতরে ঠিক ততটাই নিরব কান্নায় চিৎকার করছে আমার আমি সত্ত্বা। মুখে লজ্জামাখা হাসির জায়গায় চোখে জল কি মানায়? তাই মুখে প্লাস্টিকের এক হাসি ঝুলিয়ে রেখেছি। যে হাসি কখনো নষ্ট হবে না। চাইলেই সবার সামনে দেয়া যাবে।
আজকের এই দিনটার জন্য দীর্ঘ পাঁচবছর অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কে জানতো যে এইদিন আমার জীবনে যখন আসবে সেই সময়ের প্রতিটা মুহুর্ত আমার কাছে বিষাক্ত মনে হবে। জানলে হয়তো কখনোই এইদিনের অপেক্ষা করতাম না। চাইতাম না এইদিন আসুক আমার জীবনে । কিছু করার নেই আমার। একদিন সে আমার হাতটি ধরে বসে আছে , একটা সময় এসে গেলো ,তখন আমার হাতে শক্ত করে ধরে রাখা হাতটা মুহুর্তেই ঢিল হয়ে যায়। আর একটু একটু করে পুরো হাতটাই ছেড়ে দিয়ে মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে বলে, এখন আমার পক্ষে তোমার সাথে রিলেশন টিকিয়ে রাখা সম্ভব না। তোমার বাবা মা এর পছন্দ মতো বিয়ে করে নাও।
একমুহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যেনো। আমি কি ঠিক শুনেছি? চোখ ভরে পানি আসছিলো। অপেক্ষা করছিলো ঝড়ে পড়ার অনুমতির জন্য। ওকে কারণ জিজ্ঞাসা করতেই কিছু না বলে উঠে চলে গেলো। একবারও পিছন ফিরে তাকায় নি। আর আমার চোখভরা জল যা ঝরে পড়ার অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছিল তা দুচোখ ছাপিয়ে গাল বেয়ে পড়তে লাগল। কারণ ঝরে পড়ার অনুমতি যে পেয়ে গেছে।
এসবই ভাবছিলাম তখন হঠাৎ করে আমার সব ফ্রেন্ডরা হুড়মুড় করে এসে ঘরে ঢুকলো। ওরা দেখার আগেই চট করে চোখের কোণে জমা জলগুলো মুছে ফেললাম। ওরা এসে হাসি ঠাট্টা শুরু করলো। আর আমিও ওদের সাথে তাল মেলাতে লাগলাম। এই সময়ে একটি মেয়ে আমাকে প্রপোজ করলো আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম৷ কারণ তাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে রিলেশন করার ইচ্ছে আমার ছিল না।
হঠাৎ কাঁধে কারো ছোঁয়া পেয়ে সেদিকে তাকালাম। দেখি প্রিয় মানুষটি দাড়িয়ে। ওকে দেখে বললাম, তুমি এখানে যে? যাও নি??
কেনো করছো তুমিএমনটা?
কি করেছি আমি?
তুমি কি সত্যিই বুঝতে পারো নি যে আমি কিসের কথা বলছি?
চুপ হয়ে গেলাম আমি। কারণ কি বলবো? কিছুই যে বলার নেই আমার।
আমাকে নিয়ে আমার বাবা মা এর অনেক স্বপ্ন ছিল।
তাচ্ছিল্যময় একটা হাসি দিয়ে বললাম,
হয়তো খুব জলদি ভুলে যাবে।
তুমি ভুলতে পারবি??
নিশ্চুপ আমি। কি বলবো? ভুলে যাব? সত্যিই কি পারবো? যার বসবাস হৃদয়ের গহীনে,, যার কথা প্রতিটা মুহূর্তে কানের কাছে বাজে,, যার মুখটা চোখের তারায় ভাসে, অনুভবে যে আমার সাথে মিশে তাকে কি সত্যিই ভুলে যেতে পারবো? নাকি ভুলে যাওয়ার অভিনয় করবো আজীবন? এমন এক প্রশ্ন করেছে যার উত্তর জানা থাকলেও আমি দিতে চাই না। এরকম সময় বাবা আমার কাছে এসে মাথায় হাত রাখেন। বাবার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসি দিলাম। সবাই ছেড়ে গেলেও আমার বাবা মা কখনোও ছেড়ে যাবে না ।
কবিতা – এমন একটা অনুভুতি যা আমরা কেউ ই জানিনা
লেখক মোঃ ছিদ্দিক
সে তখন একটা অনুভূতি খুঁজে বেড়ায় আর
পৃথিবী ধীরে ধীরে তার সীমানা মুছে দিতে থাকে…
…। নগ্নতা কিংবা গাছপালার গন্ধ।…
প্রবেশের মুহূর্তেও মেয়েটি সেই অনুভূতিটি খুঁজে চলে
তারপর হারিয়ে যেতে থাকে।
চেতনা কী?
প্রথম স্খলনের পর পুরুষটি দাঁড়িয়ে থাকে ও
হাঁটু মুড়ে মেয়েটি স্বভাবতই যা পছন্দ করে সেভাবেই
অনুভূতিটা খুঁজতে থাকে। যেন অনেক দূর থেকে সে
ভাবে— সত্যি বলতে তার জীবনে যেন কী একটা নেই!
… কিন্তু সম্পূর্ণ নগ্ন হওয়ার পরও একটা আড়াল, যা তারা
কখনো ঘোচাতে পারে না।
…। পুরুষটি আসন বদলে নেয়।…
দ্বিতীয় চরম মুহূর্তেও যখন ঝাপসা হয়ে এল সব— তখনও
মেয়েটি টাটকা নিসর্গের গন্ধ পায়— গাছপালা বন্য পোকামাকড়।
সে ডানা মেলে উড়বার চেষ্টা করে। কোনোভাবে
তার সামনের এই দেয়ালটা ভেঙে ফেলা যেত না?
(লেখক পরিচিতি – কবি মোঃ ছিদ্দিক” ভোলার দৌলতখান পৌরসভা ৬ নং ওয়ার্ডে ২০০০ সালে ১০ই আগষ্ট জম্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম- সফিকুল ইসলাম ও তার মাতার নাম – নিলুফা বেগম । পেশায় কবি, সাংবাদিক ও ছাত্র । তিনি ভোলার দৌলতখানের সুকদেব এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র । তিনি ছোট থেকেই ,কবিতা , গল্প ,উপন্যাস ,লিখতেন তার লেখা উল্লেখযোগ্য গল্প হলো সেই মেয়েটি ও ছোট্ট গল্প এবং তার লেখা উল্লেখযোগ্য কবিতা হলো মাঝরাতের স্বপ্ন, কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি,লক্ষী ছেলে, বিবেকের দ্বার খোলো,সব সময়ের বিকেল, এবার ঈদে , এমন একটা অনুভুতি যা আমরা কেউ ই জানিনা, রুপকথা ইত্যাদি
Discussion about this post