
দেশের শিক্ষার্থীদের সহজশর্তে কিস্তিতে ফোর–জি স্মার্টফোন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্যামসাং বাংলাদেশ। কোন ডাউন পেমেন্ট ছাড়াই ৬–১২ মাসের কিস্তিতে স্যামসাং স্মার্টফোন কিনতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে চাকরিজীবী তরুণ–তরুণীরাও একই সুবিধা পাবেন।
বাংলাদেশে স্যামসাং স্মার্টফোন উৎপাদনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আজ শনিবার ফেয়ার ইলেকট্রনিক্সের চেয়ারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব এ ঘোষণা দেন।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিশ্বে কোথাও স্যামসাং এই ধরনের সুযোগ না দিলেও বাংলাদেশে অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে স্যামসাং এর সকল শো রুমে এই সুযোগ মিলবে। অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, তরুণদের কাছে স্মার্টফোন সহজলভ্য করার জন্য স্যামসাং বাংলাদেশ ও ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স যৌথভাবে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনার প্রক্রিয়াটি হবে সহজ।
স্যামসাং বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার স্যাংওয়ান ইয়ুন বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বিভিন্ন খাতে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। বর্তমানে দেশটি প্রযুক্তি হাবে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট-এর তথ্যমতে, ২৫ শতাংশেরও বেশি মার্কেট শেয়ার নিয়ে পরিমাণের ভিত্তিতে স্যামসাং এক নম্বর স্মার্টফোন প্রতিষ্ঠান। এর পাশাপাশি ৪৩ শতাংশেরও বেশি মার্কেট শেয়ার নিয়ে অর্থমূল্যের ভিত্তিতেও এক নম্বর স্মার্টফোন ব্র্যান্ড স্যামসাং।’
ফেয়ার গ্রুপের চিফ মার্কেটিং অফিসার মেসবাহ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাজারে যে স্যামসাং স্মার্টফোন পাওয়া যায় তার ৯০ থেকে ৯৫ ভাগই দেশে উৎপাদিত। গত এক বছরে দেশের কারখানায় ১৫ লাখ সেট উৎপাদন হয়েছে। আগামী বছর সেটি ২৫ লাখে দাঁড়াবে । কিছুদিনের মধ্যে ফ্লাগশিট ও নোট সিরিজ এখানে উৎপাদিত হতে যাচ্ছে। ট্যাব তৈরিরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী বছরেই এগুলো বাজারে পাওয়া যাবে। প্রতিষ্ঠানটি আগামী বছর স্যামসাং স্মার্টফোনের মাদার বোর্ড উৎপাদনে যাবে বলেও জানান তিনি। এখন ১২০ দিনের ওয়ারেন্টি দেওয়া হচ্ছে। কেউ চাইলে এটা বাড়িতে ২/৩ বছরের ওয়ারেন্টিও করে নিতে পারবেন। এক হাজার শ্রমিক বর্তমানে স্যামসাংয়ের কারখানায় কাজ করছে। এর মধ্যে ৩০ ভাগই নারী। তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে স্যামসাং এর কারখানায় ৫০ জন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার কাজ করছেন।
নরসিংদীতে গত বছর স্যামসাংয়ের ফোর–জি স্মার্ট উৎপাদন শুরু করে ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স। এতে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স। কারখানাটিতে ১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে ২৫ শতাংশ নারী। এ ছাড়া ৫০ জন দক্ষ প্রকৌশলীর পাশাপাশি উৎপাদনের সব পর্যায় তদারকি করেন স্যামসাংয়ের নিজস্ব প্রকৌশলীরা। বর্তমানে ফেয়ার ইলেকট্রনিকস স্যামসাংয়ের সাড়ে ৭ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার স্মার্টফোন উৎপাদন করছে। তার মধ্যে আছে গ্যালাক্সি এম সিরিজ ও গ্যালাক্সি এ সিরিজের প্রায় সব স্মার্টফোন।
বাংলাদেশের ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত সব হ্যান্ডসেটই ফোরজি স্মার্টফোন। হ্যান্ডসেটগুলোর বাজার মূল্য সর্বনিম্ন সাড়ে ৭ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা। এগুলোর মধ্যে সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন গ্যালাক্সি এম সিরিজ এবং প্রায় সকল গ্যালাক্সি এ সিরিজের হ্যান্ডসেটগুলোও রয়েছে।
রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, ‘আমদানিকৃত হ্যান্ডসেট কিনতে যেখানে একজন গ্রাহককে ১৪ হাজার টাকা দিতে হতো, সেখানে দেশে সংযোজনের ফলে সেই সেট ১০ হাজার টাকায় তারা কিনতে পারছেন। দেশে সংযোজন করা সব সেটের দামই কমে গেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্যামসাং বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার স্যাংওয়ান ইয়ুন, জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইচ ডি লি, মহাব্যবস্থাপক বোমিন কিম, বিপণন বিভাগের প্রধান আশিক হাসান প্রমুখ।
Discussion about this post