
আমার সন্তানের হাতের যে জায়গাটা
তোমাদের আঘাতে আঘাতে নীল হয়ে আছে,
জানো বাবারা?
ঠিক ওখানটাতেই ওকে ধরে আমি স্কুলে নিয়ে যেতাম
ওই যে তোমাদের কিল ঘুষিতে ও অমন করে চোখ বন্ধ করে আছে
বাবা তোমরা জানো, ও ঘুমুলেই আমি চোখে চুমু খেতাম,
চাইতাম ও আরেকটু ঘুমিয়ে থাকুক
তোমরা ওকে চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দিলে!
যখন আমার উদরে ঢিবঢিব করে উঠেছিল একটা প্রাণ
দশমাস সে কী দূর্বিষহ যন্ত্রণা,
তার পর কত নির্ঘুম রাত
এরপর যখন ওর মুখটা দেখলাম,
সব কষ্ট যেন নিমিষেই উড়ে গেলো …
ওকে নিয়ে আমার মনে ঘুরে বেড়াতো ঝলমলে সব স্বপ্ন
স্বপ্ন দেখতাম ছেলেটা আমার
একদিন বিশ্ব জয় করবে,
তোমরা বুঝি জানতে আমার সে স্বপ্ন …? তাই বুঝি মৃত্যু পরওয়ানা হাতে দিয়ে সারা দেশজুড়ে জানিয়ে দিলে আমার স্বপ্ন ভঙ্গের বার্তা‘টা..?
তোমরা কি বলতে পারো জীবন প্রদিপ নিভে যাওয়ার ক্ষণে কেমন লেগেছিল আমার সোনা মানিকের…?
ও কি পানি খেতে চেয়েছিল?
তোমারা কি কেউ ওর বুকের উপরে উঠেছিলে ?
তোমরা কি ওর মাথায় রড দিয়ে আঘাত করেছিলে ..?
আহা বাবা যদি একবার জানতাম … বলতাম আমায় টুকরো টুকরো করে মেরে ফেলো কিন্তু আমার মানিক’কে এভাবে মেরো না
যদি বলতে পারতাম ছোট্ট ছেলেটা আমার অন্ধকার বড্ড বেশি ভয় পেত;
এটা শুনে যদি তোমাদের এতটুকু করুনা হতো, যদি তোমরা মানুষ হতে …
তাহলে আমি বলতাম;
ওকে মেরো না, আর মেরো না;
ওয়ে আমার সাত রাজার ধন; শোনা মানিক,
ওর শরীর জুড়ে আমার স্নেহের পরশ,
ওর গালে আমার অনেক চুমু,
ওর মুখে আমি কত নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছি, ওর পিঠে আমি সাবান দিয়ে গোসল করিয়েছি,
আমার মানিক’কে আমি কত যে বুকে জড়িয়ে ধরেছি।
Discussion about this post