ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ইভিএম পদ্ধতিতে হবে বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। একইসঙ্গে তা একটি সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন সিইসি। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এসময় ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বী ও প্রতিযোগিতামূলক হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, আমরা ত্রুটিমুক্ত নির্বাচন করার জন্যই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করবো ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে। যাতে মানুষ ভোট দিয়ে আসতে পারে। এখানে ত্রুটিযুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ রাখতে চাই না। নির্বাচন প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। আশা করছি, সব দল প্রার্থী দেবে।
সিইসি বলেন, আমরা আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ইভিএমের মাধ্যমে ত্রুটিমুক্ত নির্বাচন করা সম্ভব। বিশ্বের সব দেশ থেকে ইভিএম উঠে গেছে তা না। কিছু কিছু বিষয় আছে। যদি জার্মানির তুলনা ধরা হয়, তাহলে তাদের প্রযুক্তি ও যে অগ্রগতি তাতে আমাদের মাঠ পর্যায়ে ব্যবধান রয়েছে। ভোটের মাঠে ওইসব দেশের যে প্রেক্ষাপট, তার সঙ্গে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটের তুলনা করা চলে না।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি ইভিএমই ভোটারদের নিশ্চিত করা এবং তাদের ভোট দেওয়ার ব্যাপারে একটি অবস্থান সৃষ্টি করার সহজ উপায়। পাশাপাশি ইভিএম ত্রুটিযুক্ত এটাও ঠিক না, কোনো এক্সপার্ট এ কথা বলেনি।
সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের উক্তিকে উল্লেখ করে সাংবাদিকরা ইভিএম প্রযুক্তি কতোটা সঠিক জানতে চাইলে সিইসি বলেন, বদিউল আলম মজুমদার সাহেবকে ইভিএমের বিষয়ে উপযুক্ত লোক বলে মনে করি না। এ প্রযুক্তির বিষয়ে তাকে সেইভাবে দক্ষ গণ্য করি না।
তিনি বলেন, যারা নির্বাচন পরিচালনা, ইভিএম ব্যবহার ও প্রয়োগ করেন তাদের মতামত আমি জিজ্ঞেস করেছি। তারা ইভিএমে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার কথা বলেছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবো। আমাদের ব্যবস্থাপনার মধ্যে কখনো ত্রুটি ছিল না, এখনো থাকবে না। ভোটারদের প্রতি আহ্বান থাকবে নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য। আমরা ভোটারদের আহ্বান করবো তার পাশাপাশি প্রার্থীদেরও কর্তব্য ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হলে ভোটার সংখ্যা বাড়বে। যেমনটা ভোলার লালমোহন পৌরসভায় ৭১ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছে ইভিএমের মাধ্যমে। কারণ এখানে নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক ছিল।
ঢাকা সিটি নির্বাচনে সেনা বাহিনী মোতায়েনের কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এই নির্বাচনে সেনা বাহিনী দরকার নেই। এই নির্বাচন পরিচালানায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি যথেষ্ট। তাদের সেই সামর্থ এবং যোগত্যা আছে।
বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কারন জানতে চাইলে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আহ্বানকারী। তবে প্রার্থী কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিদের দায়িত্ব ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া।
জনগণের আস্থাহীনতা কমাতে নির্বাচন কমিশন কি করবে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, কমিশন জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান করবে। ভোট পদ্ধতিতে ত্রুটি কখনও ছিলো না এবং এখনও নেই বলে বক্তব্যে বলেন তিনি।
এর আগে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় পটুয়াখালী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান সহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
Discussion about this post