ভারতের হাতে নিজেদের পরমাণু কেন্দ্রগুলির তালিকা তুলে দিল পাকিস্তান। দ্বিপাক্ষিক চুক্তির শর্ত মেনে বুধবার ভারতের হাতে এ তালিকা দেয় পাকিস্তান। ভারতীয় হাই কমিশনের আধিকারিকদের হাতে এই তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পাক বিদেশ মন্ত্রী। অন্যদিকে ভারতও তাদের পরমাণু কেন্দ্রগুলির একটি তালিকা পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়েছে।
১৯৮৮ সালে পরমাণু কেন্দ্রে কোনও প্রকার হামলা ঠেকাতে চুক্তিবদ্ধ হয় আণবিক শক্তিধারী দুই দেশ। সেই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিবছর ১ জানুয়ারি ভারত-পাকিস্তান পরস্পরকে নিজেদের পরমাণু কেন্দ্রের ব্যাপারে অবগত করে। ১৯৯২ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এই প্রথা চলে আসছে। এর ফলে দু’দেশের মধ্যে কিছুটা হলেও পারস্পরিক বিশ্বাস বজায় থাকছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে ভারত ও পাকিস্তানের কাছে মিলিতভাবে প্রায় ২১০টি পরমাণু বোমা রয়েছে। ফলে দুই পড়শি দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ আকার নেবে। কয়েকদিন আগেই এক রিপোর্টে বলা হয় যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আণবিক যুদ্ধ হলে মৃত্যু হবে কয়েক কোটি মানুষের।
তবে, তালিকা আদানপ্রদান করলেও পাকিস্তানের অভিসন্ধি নিয়ে বরাবরই সতর্ক নয়াদিল্লি। নরেন্দ্র মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ভারতের অত্যাধুনিক ক্রুজ মিসাইল ব্রহ্মসের আওতায় পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ। যুদ্ধ বাঁধলে, নির্দেশ পাওয়া মাত্রই এই ঘাতক ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়বে ওই শহরের উপর। এদিকে, কয়েক মাস আগেই পোখরানে দাঁড়িয়ে, পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে পাকিস্তানকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং৷ তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার নীতিতে বিশ্বাসী ভারত৷ কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে, তা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে৷ অর্থাৎ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর মন্তব্যেই স্পষ্ট, ভারতের ‘নো ফার্স্ট ইউজ পলিসি’কে যেন নয়াদিল্লির দুর্বলতা না ভাবে ইসলামাবাদ৷ পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্তে বদলেরও সাহস দেখাতে পারে মোদি সরকার।
Discussion about this post