সাব্বির হোসেন, টাংগাইল প্রতিনিধিঃ
আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ সমাবেশে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আজ ৩১শে ডিসেম্বর সকাল থেকে মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের গোড়াই-সখিপুর রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে সকল মানুষের দাবি বর্তমান সরকারের কাছে তাদের বাব-দাদার ভিটে মাটি থেকে যেন তাদের সরিয়ে দেওয়া না হয়। জনসাধারণ আরও বলেন, যে দেশ এতো রোহিঙ্গার বসবাস সে দেশে আমরা দেশের নাগরিক হয়েও অবহেলিত কেন।
এসময় বাঁশতৈল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব নুরুল ইসলাম (নুরু) তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৬২ সালে তৎকালিন জমিদারের কাছ থেকে পত্তনের সূত্র অনুযায়ী রেকর্ড পায়। তবে ১৯৮২ সালে এরশাদ সরকার ক্ষমতায় এসে আমাদের রেকর্ডকৃত জমিকে অন্যায় ভাবে বনবিভাগের নামে লেখে দেয়। সে সূত্র ধরে আমাদের মির্জাপুর উপজেলায় বাড়িঘর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে যা আমাদের জন্য খুবই দুঃজনক। যে দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘরহীন মানুষকে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে সেই দেশ কেন শতবছরের বাব-দাদার ভিটে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। সুতরাং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন আমাদের এই উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে ৬২ সালের রেকর্ড টোটালি বাতিল করে আমাদের সম্পত্তি আমাদেরকে ফিরিয়ে দিন।
মানববন্ধনে মির্জাপুর উপজেলার সাধারণ জনতার পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, বাঁশতৈল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নূর ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুনিল সারথি বর্মণ, উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন আল আজাদ, বাঁশতৈল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আজাহারুল ইসলাম,সাধারণত সম্পাদক মোকলেছুর রহমান ,সাবেক চেয়ারম্যান সামছুল আলম সামছু,বাঁশতৈল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লুৎফর রহমান কলিন, সাধারণত সম্পাদক সাগর আহমেদ লাভলু,স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বিপ্লব হোসেন সাকিব, বাঁশতৈল ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি ওমর সিকদার, মোশাররফ হোসেন মেম্বারসহ হাজার হাজার জনগণ অংশ গ্রহণ করেন।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার জমি ১৯২০ সালে সেটেলমেন্ট রেকর্ডভুক্ত হওয়ার পর তৎকালীন সরকার ১৯২৭-২৮ সালে গেজেট মূলে মির্জাপুরসহ আশপাশের কয়েকটি অঞ্চলের জায়গা বন বিভাগের কাছে ন্যস্ত করে। সরকার ১৯৮২ সালে আটিয়া অধ্যাদেশ জারি করে। বসতবাড়িসহ সাধারণ মানুষের ১৯৬২ সালের রেকর্ডভুক্ত জমিও এই অধ্যাদেশের আওতায় আনা হয়। এই অধ্যাদেশের আওতায় বর্তমানে প্রায় ৪৫ হাজার একর জমি রয়েছে।
Discussion about this post