মেহেদি হাসানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে জয়ের ধারায় ফিরল মাশরাফির ঢাকা প্লাটুন। আজ টুর্নামেন্টের ১৭তম ম্যাচে ঢাকা ৫ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে। নিজেদের মাঠেও কুমিল্লাকে ২০ রানে হারিয়েছিল ঢাকা। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬০ রান করে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। জবাবে মেহেদির ২৯ বলে ৫৯ রানের সুবাদে ১ বল বাকী রেখে জয়ের স্বাদ নেয় মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন ঢাকা প্লাটুন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ঢাকার মেহেদি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট হাতে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। দ্বিতীয় ওভারেই উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন ঢাকার অফস্পিনার মেহেদি হাসান। মাশরাফির করা ইনিংসের প্রথম ওভারে পরপর দুটি বাউন্ডারি তুলে নেয়া সৌম্যকে (১০) বোল্ড করেন মেহেদি। তিন নম্বরে নামা সাব্বির রহমানকে শুন্য হাতে বিদায় দেন তিনি। সাত বল খেলে উইকেটের সাথে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টায় ছিলেন সাব্বির। কিন্তু রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় ফর্মহীনতা ভোগা সাব্বিরকে।
কুমিল্লার মিডল-অর্ডারের ভরসা ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান গত চার ম্যাচে করেছেন ১৯১ রান। আজও তার কাছ থেকে বড় ইনিংসের প্রত্যাশায় ছিল দল। কিন্তু এবার আর সম্ভব হয়নি। সাব্বিরের মত উইকেটে সেট হবার লক্ষ্যে ধীর ছিলেন মালান। ১৬ বল খেলে উইকেটে সেট হলেও, ১৭তম বলে পাকিস্তানের স্পিনার শাদাব খানের বলে আউট হন ৯ রানে। ৯.৩ ওভারে দলীয় ৫৭ রানে তিন ব্য্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে কুমিল্লা। এ অবস্থা থেকে বের হবার পথ খুঁজছিল তারা। দলের প্রয়োজনীয় সময় এবার জ্বলে উঠেন ভানুকা রাজাপাক্ষে। কুমিল্লার চার ম্যাচে নিষ্প্রভ ছিলেন এই শ্রীলঙ্কান। করেছিলেন মাত্র ৮২ রান।
বাংলাদেশ ছাড়ার আগে কুমিল্লাকে কিছু দেয়ার তাগাদা ছিল রাজাপাক্ষের। ইয়াসির আলীকে নিয়ে ঢাকার বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন তিনি। ৪১ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর মারমুখী হন রাজাপাক্ষে। চার-ছক্কায় কুমিল্লার স্কোর বোর্ডকে শক্তপোক্ত করতে থাকেন। তাকে স্ট্রাইক দিয়ে সঙ্গ দিচ্ছিলেন ইয়াসির। শেষ পর্যন্ত ৬৫ বলে ৪টি চার ও ৭টি ছক্কায় অপরাজিত ৯৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন রাজাপাক্ষে। ২৭ বলে ২ চারে অপরাজিত ৩০ রান করেন ইয়াসির। ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬০ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় কুমিল্লা।
জবাবে ১৬১ রানের লক্ষ্যে প্রথম ওভারের শেষ বলে উইকেট হারায় ঢাকার ওপেনার এনামুল হক। ০ রানে ফিরেন তিনি। তার বিদায়ে উইকেটে যান মেহেদি। পিঞ্চ হিটার হিসেবে খেলতে নেমে রানের ফুলঝুড়ি ফুটান তিনি। ফলে পাওয়ার প্লে’তে ৬২ রান পায় ঢাকা। এরমধ্যে ১৭ বলে ৪১ রান ছিল মেহেদির। হাফ-সেঞ্চুরির পর দলীয় ৮৪ রানে আউট হন তিনি। তামিম-মেহেদি দ্বিতীয় উইকেটে ৪৭ বলে ৮৩ রান যোগ করেন। ২৯ বলে ২টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৫৯ রান করে আউট হন মেহেদি। নবম ওভারে মেহেদির আউটের পর দলীয় ৮৮ রানে ফিরেন পাকিস্তানের আসিফ আলী ও জাকের আলী।
দুজনেই রানের খাতা খোলার আগে আফগানিস্তানের মুজিব উর রহমানের বলে ফিরেন। এরপর মুমিনুল হককে নিয়ে দলকে খেলায় ফেরান তামিম। চতুর্থ উইকেটে ৩৪ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪০ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৪ রান করা তামিমকে শিকার করে কুমিল্লাকে খেলায় ফেরান সৌম্য। তখন জয় থেকে ৩৯ রান দুরে দাঁড়িয়ে ঢাকা। বল ছিল ২৭টি। এ অবস্থায় ক্রিজে গিয়ে মারমুখী হয়ে উঠেন পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি। ১৬ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে ঢাকার জয় নিশ্চিত করেন এই পাকিস্তানি তারকা। ২৬ বলে ১টি চারে ২৮ রান করেন মুমিনুল।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
Discussion about this post