আপন বড় ভাইকে খুন। এ ঘটনায় হলো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। অতঃপর ২১ বছরের কারাজীবন। এরপর মুক্তি। কিন্তু মুক্তি পেয়েই দেড় মাসের মাথায় হত্যা করলেন ছোট ভাইয়ের দুই শিশুপুত্র ও স্ত্রীকে। আর এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এবার এই নির্মম খুনির সাজা হলো মৃত্যুদণ্ড। নিম্ন আদালতের দেওয়া এ মৃত্যুদণ্ডের সাজা গতকাল বুধবার বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার কেসে দণ্ডিত এ ব্যক্তি হচ্ছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার নামাসিদলা গ্রামের বোরহান উদ্দিন।
বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার এক রায়ে নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছেন। জানা যায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে ১৯৯৩ সালে বড় ভাই সোহরাব উদ্দিনকে খুন করেন বোরহান উদ্দিন। এ ঘটনায় করা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয় তাঁর। এক ছেলে খুন, আরেক ছেলের যাবজ্জীবন-এ কারণে একপর্যায়ে তৃতীয় অর্থাৎ সর্বকনিষ্ঠ ছেলের নামে সব সম্পদ লিখে দেন মা-বাবা। এদিকে ২১ বছর কারাভোগের পর ২০১৩ সালে মুক্তি পান বোরহান। কারাগার থেকে বের হয়ে জানতে পারেন মা-বাবা সব সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন ছোট ভাই ওমর ফারুককে। সম্পদের ভাগ চাইলে তাতে অসম্মতি জানান ছোট ভাই। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বোরহান হত্যা করেন সহোদর ফারুকের স্ত্রী নাজমা বেগম ও তাদের দুই শিশুপুত্রকে। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট এই ভয়াবহ তিন খুনের ঘটনা ঘটে। এরপর তিনজনের লাশ গুমের উদ্দেশ্যে তিনি লুকিয়ে রাখে লাকড়ির গুদামে।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের একটি আদালত বোরহান উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে পাঠানো হয় ডেথ রেফারেন্স (মামলার যাবতীয় নথি)। এরপর কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপিল (জেল আপিল) করেন বোরহান উদ্দিন। এই ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে গতকাল মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দিলেন হাইকোর্ট।
আসামিপক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট রওশন আরা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুল ইসলাম, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফারহানা আফরোজ রুনা, শোভনা বানু ও শামসুন্নাহার লাইজু।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
Discussion about this post