অন্যায় ভাবে ছেলেকে চাকরিচ্যুত করার অভিমানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা (গার্ড অফ অনার) ছাড়াই দাফন করা করা হয়েছিল মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনকে। সেই ঘটনায় পর দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দেওয়া চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলো মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাহমুদুল আলম মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়ি দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬ নম্বর আউলিয়াপুর ইউনিয়নের জুগিবাড়ী গ্রামে যান। সেখানে মুক্তিযাদ্ধা ইসমাইল হোসেনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের পরিবার ডিসির দেওয়া চাকরি ফিরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে মরহুম মুক্তিযোদ্ধার বড় ছেলে নুরুজ্জামান বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক আমাদের বাড়িতে আসেন। সেখানে আমাদের সঙ্গে কথা বলার পর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রহরী পদে চাকরি দিতে চান। কিন্তু আমার ভাইকে বিনা অপরাধে যারা চাকরিচ্যুত করেছেন, তাদের অধীনে আমার ভাই চাকরি করবে না। কারণ যারা চাকরি দিতে পারে তারা পরবর্তীতে চাকরিচ্যুতও করতে পারেন। জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির সুপারিশে আমার ভাইকে দিনাজপুর সদর এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) গাড়ি চালক পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি আমাদের অভিভাবক, তিনি দিনাজপুরে নেই। তিনি এসে যা সিদ্ধান্ত দেবেন, আমরা তা-ই মেনে নেব।
এ সময় `মাফ করে দেওয়া’র বিষয়টি জানতে চাইলে নুরুজ্জামান বলেন, আমার বাবা জীবদশায় যার সঙ্গে যার সাক্ষাৎ পাননি, মরণের পরেও যাদের কারণে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গ্রহণ করেননি, তাদেরকে আমরা মাফ করার কে?
শনিবার দুপুরে বিভাগীয় কমিশনার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. জাকির হোসেন ঘটনা তদন্তে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসমাইল হোসেনের বাড়ীতে যান। সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার সময় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. জাকির হোসেন বলেন, আমি ঘটনা তদন্তে এসেছি। ভিকটিম ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়েছি। নুর ইসলামকে লিখিত বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গেল সোমবার দিনাজপুরের সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের যোগীবাড়ি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসমাইল হোসেন তার ছেলের চাকরিচ্যুতি ও বাস্তুচ্যুতির বিষয়ে স্থানীয় সংসদের কাছে একটি চিঠি লেখেন। চিঠি লেখার ২৪ ঘন্টা ঘন্টার মধ্যে মারা যান তিনি।
Discussion about this post